নদীর উর্বর অববাহিকায়, পর্বতের উপত্যকায়, কিংবা সবুজ তৃণভূমি ও ঘন বনকে ঘিরে হাজার হাজার বছর পূর্বে গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন মানব সভ্যতা। সময়ের প্রবাহে এই সভ্যতাগুলোকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে বেশ কিছু ছোট ছোট রাজ্য। এই রাজ্যগুলোর যুদ্ধে বিজয়ী রাজ্য গড়ে তোলে সাম্রাজ্য। এমন অনেক সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের সাক্ষী পৃথিবীর ইতিহাস।
ইতিহাসের সেসব প্রধান প্রধান সাম্রাজ্য নিয়ে কুইজার্ডসের আয়োজন সাম্রাজ্যের সময়রেখা।
আক্কাদিয়ান সাম্রাজ্য
২৩৩৪-২১৫৪ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ
টাইগ্রিস ও ইউফ্রেতিস নদীর অববাহিকায় প্রাচীন ব্যাবিলনের সুমেরীয় সভ্যতার এলাকাগুলো দখলে নিয়ে এই সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তন হয়। জানা যায় ২৩৩৪ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে সারগন নামে একজন শাসক এই সাম্রাজ্যের সূচনা করেন।
নমরুদ নামে যে অত্যাচারী শাসকের কথা পবিত্র কোরআন ও বাইবেলে উল্লেখ আছে তিনি এই সাম্রাজ্যের সম্রাট ছিলেন বলে জানা যায়।
আসিরীয় সাম্রাজ্য
২০২৫-৬০৯ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ
প্রাচীন ব্যাবিলনের কাছাকাছি গড়ে ওঠা আসিরীয় সভ্যতার আশুর শহর এক সময় ছিল আক্কাদিয়ান সাম্রাজের অংশ। পরবর্তীতে এই শহর থেকেই গড়ে ওঠে এই সাম্রাজ্য।
সারগনিয়দের নেতৃত্বে পরে এই সাম্রাজ্য তার শিখরে পৌঁছে। উত্তরে তুরস্ক, দক্ষিণে সৌদি আরব, পূর্বে ইরানের পূর্ব অংশ এবং পশ্চিমে মিশরের নীল নদের অববাহিকা পর্যন্ত বিস্তার ছিল আসিরীয়দের।
মিশরীয় সাম্রাজ্য
১৫৫০-৫২৫ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ
যদিও ২৬০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দের দিকে নীল নদের অববাহিকায় মিশরীয় সভ্যতার জন্ম এবং সেখানে ফারাওদের পিরামিড বানানোর সময় থেকেই একটি সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল, মিশরীয় সাম্রাজ্য বলতে মূলত ব্রোঞ্জ যুগের শেষভাগে খ্রিস্ট পূর্ব পঞ্চদশ শতকে গড়ে ওঠা সাম্রাজ্যকেই বোঝায়।
প্রথম আমেনহোতেপের শাসনকালে মিশরীয় সাম্রাজ্য ইউফ্রেতিস নদীর অপর অংশ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল, এছাড়া লেভান্ত (বর্তমান সিরিয়া) অঞ্চলেও তিনি অভিযান চালিয়েছেন বলে জানা যায়। এছাড়া উল্লেখযোগ্য সম্রাটদের মধ্যে দ্বিতীয় রামেসিসের নাম জানা যায় যিনি মিশরজুড়ে বহু স্থাপনা গড়েছিলেন।
একিমেনিদ সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট ক্যাম্বিসিসের আক্রমণে পতন হয় মিশরীয় সাম্রাজ্যের।
ব্যাবিলনিয় সাম্রাজ্য
১৮৯৪-৫২৯ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ
বর্তমান ইরাক অঞ্চলের সবচেয়ে উর্বর ইউফ্রেতিস নদীর দক্ষিণ অংশে সূচনা হয়েছিল এই সাম্রাজ্যের যার সবচেয়ে বিখ্যাত শাসক ছিলেন হাম্মুরাবি যিনি ইতিহাসের প্রথম লিখিত আইন প্রণয়নের জন্য খ্যাত। এছাড়া এই সাম্রাজ্যের আরেকজন বিখ্যাত সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় নেবুচাদনেজার যিনি ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান তৈরির জন্য বিখ্যাত।
অনেক উত্থান-পতন এবং বিভিন্ন যুদ্ধের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে বারবার সীমানা বদলের পর দুর্বল হয়ে পড়া এই সাম্রাজ্য পরে বিলীন হয়ে যায় একিমেনিদ সাম্রাজ্যে।
একিমেনিদ সাম্রাজ্য
৫৫০-৩৩০ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ
মানব ইতিহাসের প্রথম পরাশক্তি সাম্রাজ্য হিসেবে গণ্য করা হয় পারস্যের জাগরস পর্বতমালার উপত্যকা থেকে উঠে আসা একিমেনিদদের।
আসিরীয় সাম্রাজ্যের পতনের পর মিডিয়া অঞ্চলে গড়ে ওঠা রাজ্যের রাজা অ্যাস্টাইয়াজেসকে পরাজিত করে আনশানের শাসক দ্বিতীয় সাইরাস এই সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। দ্বিতীয় সাইরাস ইতিহাসে সাইরাস দি গ্রেট হিসেবে পরিচিত পান, এবং তার ভূমি আনশান পরিচিতি পায় ‘পারসাদের ভূমি’ বা পারস্য নামে।
এই সাম্রাজ্যের বিখ্যাত সম্রাট প্রথম দারিয়ুসের সময় ভারতের তক্ষশীলা থেকে মিশরের নীল নদ পেরিয়ে লিবিয়া পর্যন্ত বিস্তৃতি পায় এই সাম্রাজ্য।
এই সাম্রাজ্য থেকেই পরিণত হতে শুরু করে পারস্যের সংস্কৃতি। পার্সিপোলিস, ব্যাবিলনের মত শহরগুলো হয়ে উঠেছিল বিশ্বজনীন শহরে (কসমোপলিটান)। আলেকজান্ডার দি গ্রেটের অভিযানে তৃতীয় দারিয়ুসের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই সাম্রাজ্যের।
হেলেনীয় সময়কাল
৩৩০-১৪৬ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ
৩৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মেসিডোনিয়ার রাজা ও হেলেনিক লীগের প্রধান আলেকজান্ডার দি গ্রেটের পারস্য বিজয়ের মধ্য দিয়ে হেলেনীয় সময়কালের সূচনা হয়।
মেসিডোনিয় সাম্রাজ্য হিসেবে যাত্রা শুরু হলেও আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর তার সহযোগীরা নিজেদের মধ্যে সাম্রাজ্যের অংশগুলো ভাগ করে নিলে গড়ে ওঠে সেলিউসিড, আত্তালিড, টলেমিয় ইত্যাদি সাম্রাজ্যের। কিন্তু সাংস্কৃতিক দিক থেকে গ্রিস ও মেসিডোনিয়ার প্রভাব ছিল। পাশাপাশি স্থানীয় সংস্কৃতিকেও আত্মীকরণ করে নিয়েছিল সাম্রাজ্য ও রাজ্যগুলো।
মৌর্য সাম্রাজ্য
৩২২-১৮৪ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ
প্রাচীন ভারতবর্ষের পূর্বদিকে সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমভূমিতে অবস্থিত মগধকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল মৌর্য সাম্রাজ্য। ভারতীয় উপমহাদেশের বৃহত্তম সাম্রাজ্য হিসেবে চিহ্নিত এই সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য। আলেকজান্ডার দি গ্রেটের মৃত্যুর পর মেসিডোনিয় সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়লে ভারতীয় উপমহাদেশের পূর্ব দিকের বেশ কিছু অংশ দখল করে নেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য।
সম্রাট অশোক মৌর্য সাম্রাজ্যের বিখ্যাত সম্রাট যার সময়ে পশ্চিমে কান্দাহার থেকে পূর্বে বঙ্গের পুন্ড্রবর্ধন, উত্তরে তক্ষশীলা থেকে দক্ষিণে ব্রহ্মগিরি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল সাম্রাজ্য। কিন্তু তার মৃত্যুর পঞ্চাশ বছর পর বিলীন হয়ে যায় সাম্রাজ্যটি।
কিন সাম্রাজ্য
২২১-২০৬ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ
চীনের পূর্ব অংশে স্থানীয় রাজাদের ছয়টি রাজ্যকে দখল করে গঠিত হয়েছিল চীনের প্রথম সাম্রাজ্য কিন সাম্রাজ্য।
সাম্রাজ্যটি প্রতিষ্ঠা করেন কিন শাসক ইয়েং ঝেং যাকে কিন শি হুয়াং দি তথা কিন সাম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট উপাধি নেন। তাকে চীনের প্রথম সম্রাট হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। কিন শব্দটি স্থানীয় ভাষায় চীন হিসেবে উচ্চারিত হয়।
মাত্র পনের বছর টিকলেও চীনের পরবর্তী সাম্রাজ্যগুলোর উপর এই সাম্রাজ্যের সাংস্কৃতিক প্রভাব ছিল ব্যাপক। চীনের বিখ্যাত টেরাকোটা সেনাবাহিনী এই সাম্রাজ্যের সময়ই তৈরি হয় যা এখন ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ।
ছবি- ড্যাভিড ডেভিস ফটো প্রোডাকশনস/আলামি
জিয়োগনু সাম্রাজ্য
২০৯ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ-প্রথম শতাব্দী
ভারতের উত্তরাংশে চীনের দক্ষিণ অংশ ও বর্তমান সময়ের মঙ্গোলিয়াকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এশিয়ার প্রথম যাযাবর সাম্রাজ্য জিয়োগনু সাম্রাজ্য। তবে অন্য সাম্রাজ্যের মত এখানে ছিল না নির্দিষ্ট কোন রাজধানী বা বৃহৎ শহর।
মঙ্গোলিয়া, চীন এবং মধ্য এশিয়ার বিস্তীর্ণ স্তেপ অঞ্চলের যাযাবর জাতিদের একটা ঐক্য ছিল মূলত এই সাম্রাজ্যটি। ছিল না কোন আমলাতন্ত্র বা প্রাসাদ-দুর্গ।
এই সাম্রাজ্য প্রথমে কিং রাজাদের সাথে এবং পরে হান সাম্রাজ্যের সাথে পাল্লা দিয়ে যুদ্ধ করেছে এমনকি হানদের পিছু হটতে বাধ্য করেছে। পরে অবশ্য হানদের সম্মিলিত আক্রমণে পতন হয় যাযাবরদের এই সাম্রাজ্যের।
ছবি- সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট
হান সাম্রাজ্য
২০২ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ-২২০ খ্রিস্টাব্দ
হান সাম্রাজ্য মূলত গড়ে উঠেছিল কিন সাম্রাজ্যের ধ্বংসাবশেষের উপর কারণ কিন সাম্রাজ্যের শেষভাগে পুরো সাম্রাজ্যে ব্যাপকভাবে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়লে সেই বিদ্রোহ থেকেই উঠে আসে হান শাসকেরা।
হান শাসক লিউ বাং ২০৬ সালে সম্রাট গাউজু হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন এই সাম্রাজ্য যার প্রাথমিক রাজধানী ছিল চ্যাং’আন শহরে যেখানে এক সময় ছিল হানদের রাজধানী।
হান সম্রাটরাই সিল্ক রোডের মাধ্যমে ইউরোপে ব্যবসা করার সুযোগ করে দেয় চীনের বণিকদের যা চীন এবং পুরো পৃথিবীর ইতিহাসের বাঁক বদলে দেয়। হান সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবন হচ্ছে কাগজ।
ছবি- নিদায় পিকচার লাইব্রেরি/আলামি
পার্থিয়ান সাম্রাজ্য
২৪৮ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ-২২৪ খ্রিস্টাব্দ
পার্থিয়ান সাম্রাজ্য প্রাচীন ইরানের একটি প্রধান রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা প্রথম আর্সেসাসের কারণে এই সাম্রাজ্যকে আর্সাসিদ সাম্রাজ্যও বলা হয়।
তুরস্কের পূর্ব অংশ থেকে ভারতের উত্তর অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এই সাম্রাজ্য তাই চীন ও ইউরোপের মধ্যকার বাণিজ্যের পথ বিখ্যাত সিল্ক রোডের একটি বড় অংশের উপর পার্থিয়ানদের নিয়ন্ত্রণ ছিল।
রোমান সাম্রাজ্যের পার্থিয়ানদের নিয়মিত যুদ্ধের কথা রোমান ইতিহাস থেকে জানা যায়। যুদ্ধ ও পালটা যুদ্ধের এক পর্যায়ে পারস্য অঞ্চলে সাসানীয়দের উত্থান ঘটলে পার্থিয়ান সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।
রোমান সাম্রাজ্য
২৭ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ-৩৯৫ খ্রিস্টাব্দ
পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত সাম্রাজ্যগুলোর একটি রোমান সাম্রাজ্য যা গড়ে উঠেছিল বর্তমান ইতালির রাজধানী রোমকে কেন্দ্র করে। একটি নগর-রাষ্ট্র হিসেবে ৫০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে রোমান প্রজাতন্ত্র যাত্রা শুরু করে।
৪৯ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে এক সংকটের সময় রোমান রাষ্ট্রনায়ক জুলিয়াস সিজার তার বিরোধীদের নেতা পম্পেইকে গৃহযুদ্ধে পরাজিত করেন। এর আগে তিনি গল অঞ্চলে (বর্তমান ফ্র্যান্স) যুদ্ধে জিতে সৈন্যদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে তাকে রোমের একনায়ক (ডিক্টেটর) হিসেবে ঘোষণা করা হয়। জুলিয়াস সিজারকে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে দেখে রোমান প্রজাতন্ত্রের তৎকালীন সিনেট সদস্যরা তাকে হত্যা করে ৪৪ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে।
এরপর দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয় তার পালক পুত্র আগস্টাস সিজার যিনি নিজেও ছিলেন একজন ভালো যোদ্ধা এবং সৈন্যদের মধ্যে জনপ্রিয়। তিনি একে একে জুলিয়াস সিজারের হত্যাকারীদের পরাজিত করেন কিংবা শাস্তির ব্যবস্থা করেন। এরপর ২৭ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে তিনি রোমান প্রজাতন্ত্রকে সাম্রাজ্যে রূপান্তর করেন এবং নিজেকে রোমান সাম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট ঘোষণা করেন।
তার সময় রোমান সাম্রাজ্য মিশর ও উত্তর আফ্রিকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। উর্বর জমি সমৃদ্ধ মিশর থেকে অনেক কম দামে খাদ্যশস্য রোমের বাজারে বিক্রি হতে শুরু করলে রোমানদের অর্থ সঞ্চয়ের হার বেড়ে যায় এবং তারা বিভিন্ন বিলাসদ্রব্য, ভাষ্কর্য তৈরিসহ অন্যান্য খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ শুরু করে। পুরো সাম্রাজ্য জুড়ে বসানো হয় মাথাপিছু কর, যেই অর্থে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে রোম।
আগস্টাস সিজারের মুখাবয়বের ভাষ্কর্য, ভিয়েনার আর্ট হিস্ট্রি জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
ছবি- আজুর ফটো/আলামি
রোমান সাম্রাজ্যে বিলাসদ্রব্য ও অন্যান্য পণ্যের চাহিদা বেড়ে গেলে সুদূর চীন, ভারত ও পারস্য অঞ্চল থেকে বণিকেরা রেশম, সুগন্ধী, মসলিন, মশলা ইত্যাদি পণ্য নিয়ে পারস্য থেকে মধ্য এশিয়া পাড়ি দিয়ে স্থল পথে এবং সমুদ্র পথে পৌঁছতে শুরু করে ইউরোপের বাজারে। ঐতিহাসিক সিল্ক রোড ধীরে ধীরে আকৃতি পেতে শুরু করে। পৃথিবীর ইতিহাসের বহু উত্থান-পতনের সাক্ষী হয়ে ওঠে এই বাণিজ্যিক পথ।
৩৯৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চারশো বছরের বেশি সময় জুড়ে ইউরোপ, আফ্রিকার উত্তর অংশ এবং মধ্য-পশ্চিম এশিয়ার বিস্তীর্ণ অংশে রোমান সাম্রাজ্য টিকে ছিল। পরে সাম্রাজ্যটি দুইটি ভিন্ন রাজ দরবারের অধীনে পরিচালিত হতে শুরু করে। কনস্ট্যান্টিনোপোলকে কেন্দ্র করে গ্রীস, তুরস্ক, মিশর ও জুডেয়া অঞ্চল নিয়ে ছিল পূর্বাঞ্চলীয় রোমান সাম্রাজ্য (Eastern Roman Empire) যাকে ইতিহাসে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়। অন্যদিকে ইতালি, ফ্র্যান্স, জার্মানি, স্পেন ও ব্রিটেনের কিছু অংশ নিয়ে ইতালির রাভেন্না অঞ্চল থেকে পরিচালিত হতে থাকে পশ্চিমাঞ্চলীয় রোমান সাম্রাজ্য (Western Roman Empire)।