পার্বত্য চট্টগ্রাম – এ নামটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। সবুজ পাহাড়ে ঘেরা এ অঞ্চল সম্পর্কে অবশ্য আমরা অনেকেই খুব বেশি কিছু জানি না। কিন্তু কতটুকু জানি? আজকের কুইজে সেটাই দেখা যাবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম: কী নিয়ে প্রশ্ন থাকছে আজ?
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কিছু তথ্য দেয়া হয়েছে নিচে। মূলত এসব তথ্যকে ঘিরেই করা হয়েছে কুইজের প্রশ্নগুলো।
– পার্বত্য চট্টগ্রামের সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিসত্তা চাকমা। ধারণা করা হয় যে চাকমারা ছিলো হিমালয়ের দক্ষিণ দেশের এক জাতি। পরে তারা আরাকানে চলে আসে। এক সময় আরাকানের রাজা তাদের উপর আক্রমণ করলে পঞ্চদশ শতকে চাকমারা পার্বত্য চট্টগ্রামে বসতি স্থাপন করে। ১৮৭৪ সালে চাকমাদের রাজধানী রাঙামাটিতে স্থানান্তরিত হয়। তবে তার আগে বিভিন্ন সময়ে রাঙ্গুনিয়া, রাউজানসহ অন্যান্য জায়গায় ছিলো এ রাজধানী।
উপরের ছবিটি ষোড়শ শতাব্দীর একটি পর্তুগিজ মানচিত্রের একাংশ। এতে দেখা যাচ্ছে প্রাচীন চাকমা রাজ্যকে।
– পঞ্চদশ শতকে পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমা রাজ্য স্থাপিত হবার পর মুঘলরা বারবার চাকমা রাজ্য আক্রমণ শুরু করে। যুদ্ধে বশ্যতা স্বীকার করলেও চাকমা রাজা খাজনার বিনিময়ে তার রাজ্যের স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখেন। ব্রিটিশ আমলেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগের আগ পর্যন্ত ব্রিটিশরা কখনো চাকমা রাজার কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করেনি।
– বাংলাদেশের উচ্চতম শৃঙ্গ সাকা হাফং। ককবরক বা ত্রিপুরা ভাষার এ শব্দের অর্থ ‘পুবের পাহাড়’। বম ভাষায় ‘TLANG MOI’ বা সুন্দর চূড়া। বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের এই চূড়াটির উচ্চতা ৩৪৫১ ফুট।
– ত্রিপুরা জাতিগোষ্ঠীর ভাষার নাম ককবরক। তবে এ ভাষার লিখিত কোন রূপ নেই। তাই তারা বাংলা বা রোমান হরফ ব্যবহার করে।
– পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী আরেক জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব বর্ণমালা নেই। তাদের বিশ্বাস হলো, তাদের দেবতা কলা পাতায় বর্ণমালা লিখে এক গয়ালের পিঠে করে বর্ণমালা পাঠাচ্ছিলো। তবে মাঝপথে গয়ালের ক্ষুধা লাগলে সেই কলাপাতা খেয়ে ফেলে। ফলে তারা বর্ণমালাহীন হয়ে যায়। জাতিগোষ্ঠীর নাম বললাম না কেন? এটা নিয়ে একটা প্রশ্ন রয়েছে!
– ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো পার্বত্য চট্টগ্রামের বহু মানুষ তাতে অংশগ্রহণ করে। তবে তাদের মাঝেও কিছু সংখ্যক রাজাকার ছিলো। যেমন: চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় পাকিস্তান সরকারের পক্ষ অবলম্বন করে শ্রীলংকা ও থাইল্যান্ডে দূত হিসাবে যান। তবে এটাই একমাত্র দিক নয়। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছিলেন, এমন পাহাড়ি মানুষও ছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য এক ব্যক্তিকে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে আজ।
– পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী শাসন ৩ টি সার্কেলে বিভক্ত। রাঙ্গামাটিতে রয়েছে চাকমা সার্কেল। অবশ্য শুধু রাঙ্গামাটিতে এর প্রশাসনিক ক্ষমতা সীমাবদ্ধ নয়। খাগড়াছড়িতে গেলে দেখা পাবেন মং সার্কেলের। আবার বান্দরবানে রয়েছে বম সার্কেলের কার্যালয়।
স্কোরের ছবি কৃতজ্ঞতা
১. শুভলং ঝর্ণা, রাঙ্গামাটি: Mirza Salman Hossain Beg/CC BY-SA 3.0
২. বগা লেক: Faisal Akram/Flickr/CC BY-SA 2.0
৩. নীলগিরি, বান্দরবান: Hasan Mahmud/Flickr/CC BY 2.0