আমাদের সেবা প্রকাশনী কুইজের দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশিত হচ্ছে আজ। পর্বের থিম হিসাবে থাকছে মাসুদ রানা, রহস্যে ঘেরা এক চরিত্র।
মাসুদ রানা বাংলাদেশে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের এক দুর্দান্ত দুঃসাহসী স্পাই। গোপন মিশন নিয়ে ঘুরে বেড়ায় দেশ-দেশান্তরে। বিচিত্র তার জীবন। অদ্ভুত রহস্যময় তার গতিবিধি। কোমলে কঠোরে মেশানো নিষ্ঠুর সুন্দর এক অন্তর। একা। টানে সবাইকে, কিন্তু বাঁধনে জড়ায় না। কোথাও অন্যায়- অবিচার-অত্যাচার দেখলে রুখে দাঁড়ায়। পদে-পদে তার বিপদ-শিহরণ-ভয় আর মৃত্যুর হাতছানি।
আধুনিক মনস্ক পাঠককে অবশ্য বাঁধনে জড়িয়েছে মাসুদ রানা – বাংলা ভাষায় লেখা স্পাই থ্রিলারের প্রধান চরিত্র। কাজী আনোয়ার হোসেনের বিখ্যাত চরিত্র মাসুদ রানা ২০১৬ সালের মে মাসে পূর্ণ করেছে ৫০ বছর। বর্তমানে ৫২তম বসন্তে পা দেয়া এ কাল্পনিক চরিত্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল ‘ধ্বংস পাহাড়’ বইয়ের মাধ্যমে। সাথে ছিলো সুলতা রায় আর পাগল বৈজ্ঞানিক কবীর চৌধুরী।
জেমস বন্ড সিরিজের ‘Doctor No’ পড়ে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেন। সেখান থেকেই পরিকল্পনা করেন বাংলা ভাষায় স্পাই থ্রিলার লেখার। ‘ধ্বংস পাহাড়’ বইটি লেখার জন্য লেখক চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, কাপ্তাইসহ বিভিন্ন জায়গায় রীতিমতো চষে বেড়িয়েছিলেন। ১৯৬৬ সালের মে মাসে প্রকাশিত হওয়া বইটির প্রচ্ছদ পরিকল্পনা করেছিলেন শিল্পী সামসুল ইসলাম।
প্রথম বাংলা মৌলিক স্পাই থ্রিলার উপন্যাস আর প্রথম বাঙালি আন্তর্জাতিক গুপ্তচর বা স্পাই চরিত্র। একটা হইচই পড়ে গেলো। এও কি সম্ভব বাংলা সাহিত্যে? সেই থেকে শুরু! মাস দশেক পর আবার হাজির হলো রানা, ‘ভারতনাট্যম’ নিয়ে। এরপর বিদেশী গল্পের ছায়া অবলম্বনে এলো ‘স্বর্ণমৃগ’। প্রথমে পাকিস্তান কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের হয়ে কাজ করা মাসুদ রানা স্বাধীনতার পর হয়ে গেলো বাংলাদেশে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের এক দুর্দান্ত দুঃসাহসী স্পাই। কোড নেম এমআরনাইন (MR9)। মেজর জেনারেল (অবঃ) রাহাত খানের নির্দেশনায় কাজ করা মাসুদ রানার সাথে একে একে হাজির হলেন সোহেল আহমেদ, সোহানা, গিলটি মিঞা সহ আরও অনেকেই।
আমাদের সবার জীবন এক অর্থে রোমাঞ্চকর করে তুললেন কাজী আনোয়ার হোসেন। ‘ধ্বংসপাহাড়’ থেকে শুরু হওয়া মাসুদ রানা এখনো পার করছে ‘দুরন্ত কৈশোর’। আমরা বুড়িয়ে গেলেও সময়ের বাঁধনে না জড়িয়ে যুগ যুগ বেঁচে থাকুক সুপারহিরো মাসুদ রানা।