পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই, যেখান কুসংস্কারে নেই। বিজ্ঞানের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত আফ্রিকার আমাজন হতে আধুনিক জাপান-আমেরিকার মানুষও কুসংস্কারে বিশ্বাস করে। কুসংস্কারে বিশ্বাসের কারণে সমাজে নানা ভয়াবহ ঘটনাও ঘটে। তাই, পৃথিবীর বিভিন্ন সংস্কৃতিতে কুসংস্কার নিয়ে আজকের এই লেখা।
মাছি কখনো কুমারী মেয়ে স্পর্শ করে না
উগান্ডার আদিবাসী মানুষেরা বিশ্বাস করে যে, মাছি কখনোই কোনো কুমারী মেয়েকে কোনো অবস্থাতেই স্পর্শ করেনা। বিবাহের পূর্বে তাই এভাবেই মেয়েদের কুমারীত্ব পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। এ প্রথার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এর সামাজিক সমস্যাগত দিকটি হলো কোনো কুমারী যদি এই কুসংস্কারের শিকার হয়, তবে সামাজিক কলঙ্ক তার ও তার পরিবারের ওপর এসে পড়ে, অনেক ক্ষেত্রে সেই কুমারীর আর বিবাহই হয় না!
ভেড়ার হৃৎপিণ্ডে নিউমোনিয়ার চিকিৎসা
স্কটল্যান্ডের অনেক এলাকায় কোনো নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগী থাকলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয় না বা ডাক্তার দেখানো হয় না বরং চিকিৎসা হিসেবে ভেড়া জবাই করে পায়ের কাছে ভেড়ার ফুসফুস রাখা হয়। অথচ তখন রোগীকে ডাক্তার দেখিয়ে যথাযথ চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। ভেড়ার ফুসফুস পায়ের কাছে রাখায় আদতেও নিউমোনিয়ার চিকিৎসা হওয়া সম্ভব নয়, বরং এতে রোগী যথাযথ চিকিৎসার অভাবে মারা যেতে পারেন।
আপেলের খোসায় বিবাহ ভাগ্য পরীক্ষা
নিউজিল্যান্ডে মেয়েরা আপেলের খোসা ছাড়িয়ে নিজের ঘাড়ের ওপর দিয়ে পিছন দিকে ফেলে দেয়। মাটিতে পড়া খোসা যদি অক্ষত থাকে তাহলে মেয়েটি সুন্দর বর পাবে এবং খোসা ভেঙ্গে গেলে মেয়েটির বিবাহ হবে না বলে বিশ্বাস করা হয়। এই কুসংস্কারের ফলাফল আশানুরূপ না হলে যে পারিবারিক ও সামাজিক চাপ ওই মেয়েটির উপর পড়ে তা বলাই বাহুল্য। আরো উল্লেখ্য যে, আপেল একটি ফল মাত্র, একটি ফলের পক্ষে অবশ্যই বিবাহ ভাগ্য নির্ধারণ করা সম্ভব নয়!
সতীদাহ প্রথা
ভারত উপমহাদেশের ভয়াবহ একটি কুসংস্কার এটি, স্বামীর মৃত্যু হলে তার স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হতো বা স্ত্রী নিজ ইচ্ছায় আত্মাহুতি দিত এ প্রথা অনুসারে। ইতিহাসে পাওয়া যায় যে ধনী ব্যাক্তির অর্থ আত্মসাতের লোভে তার স্ত্রীকে জোর করে এই কুসংস্কারের আওতায় আগুনে পুড়িয়ে মারা হতো। এই কুসংস্কারটি কিছু লোভী ব্যাক্তির সম্পদ আত্মসাতের উপায় ছাড়া আর কিছুই নয়। রাজা রামমোহন রায় এই প্রথার উচ্ছেদ করেছিলেন।
শিশু বাচ্চাকে ১৫ মিটার হতে সাদা চাদরে ফেলে দেওয়া
ভারতের শোলাপুরে মুসলিম সম্প্রদায়ের এই কুসংস্কারে শিশু বাচ্চার ভবিষ্যৎ সুস্বাস্থ্য কামনা করে শিশুকে ফেলে দেওয়া হয়। এটি একটি অত্যন্ত ভয়াবহ প্রথা কেননা এই অন্ধ বিশ্বাসে শিশুটি আহত হতে পারে এবং শিশুটির মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই প্রথার পক্ষে কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি।
This article is made possible by the support of the American People through the United States Agency for International Development (USAID.) The contents of this article are the sole responsibility of the Quizards project and do not necessarily reflect the views of USAID or the United States Government.