২০ শতকের একটা বড় সময় ধরে পুঁজিবাদী ও সমাজতন্ত্রী দেশগুলোর মধ্যে চলেছিলো স্নায়ুযুদ্ধ। সরাসরি কোন যুদ্ধে না গেলেও সারা বিশ্বে বিভিন্ন যুদ্ধবিগ্রহ, আন্দোলন, ষড়যন্ত্র-পরিকল্পনা ইত্যাদিতে এ স্নায়ুযুদ্ধের কৌশলী প্রভাব ছিলো। একে নিয়ে তৈরি হয়েছে অসংখ্য চলচ্চিত্র। এর মধ্য থেকে পাঁচটি চলচ্চিত্র নিয়ে থাকছে এবারের লেখা।
৫. Fail Safe
মুক্তির সালঃ ১৯৬৪
পরিচালকঃ সিডনি লুমেট
শ্রেষ্ঠাংশেঃ হেনরি ফনডা, ড্যান ও’হারলিহে, ওয়াল্টার ম্যাথাউ, ফ্র্যাংক ওভারটন
স্নায়ুযুদ্ধের টানাপোড়েনের মধ্যে আমেরিকার আকাশসীমানায় একটি অনুপ্রবেশকারী বিমান ধরা পড়ে। পরে দেখা যায়, সেটি সাধারণ একটি সিভিলিয়ান বিমান। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সতর্ক সংকেতটি বাতিল না হয়ে বিমানবাহিনীর একটি স্কোয়াডের কাছে সোভিয়েত ইউনিয়নের মস্কোতে পারমাণবিক হামলা করার নির্দেশ চলে যায়। মস্কোর উদ্দেশ্যে উড়াল দেয় বিমান। এরপরের ঘটনা জানতে হলে দেখতে হবে ছবিটি।
৪. The Spy Who Came in from the Cold
মুক্তির সালঃ ১৯৬৫
পরিচালকঃ মার্টিন রিট
শ্রেষ্ঠাংশেঃ রিচার্ড বার্টন, অস্কার ভারনার, ক্লেয়ার ব্লুম
মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ব্রিটিশ গুপ্তচর অ্যালেক লীমাস বার্লিন থেকে লন্ডনে ফেরত আসেন। লীমাসের ঊর্ধ্বতন অফিসার তাকে স্নায়ুযুদ্ধের ডামাডোল থেকে বের হয়ে ডেস্কওয়ার্কের কাজ নেওয়ার প্রস্তাব করলেও তাতে লীমাস রাজি হন না। তখন তাকে শেষ একটি মিশনে বার্লিন পাঠানো হয়। সেখানে গিয়ে লীমাস নিজেকে আরো বিপদজনক অপারেশনে আবিষ্কার করেন।
চলচ্চিত্রটি জঁ লে কারের একই নামের বই অবলম্বনে নির্মিত। এটি বাফটা পুরস্কার সহ বেশ কিছু পুরস্কার জিতেছিলো।
৩. The Manchurian Candidate
মুক্তির সালঃ ১৯৬২
পরিচালকঃ জন ফ্রাংকেন হাইমার
শ্রেষ্ঠাংশেঃ ফ্রাংক সিনাত্রা, লরেন্স হার্ভি, জ্যানেট লেই
কোরিয়া যুদ্ধ শেষে আমেরিকান সেনা রেমণ্ড শ শত্রুদের হাতে বন্দী হন। এ সময় তাকে ব্রেইনওয়াশ করা হয়। যুদ্ধ শেষে তিনি আমেরিকায় ফিরে গেলে জানা যায় তিনি আসলে চীন ও সোভিয়েত ইউনিয়নের অধীনে একজন গুপ্তঘাতক হিসেবে কাজ করছেন।
রিচার্ড কনডনের লেখা একই নামের থ্রিলার বইয়ের কাহিনী অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি নির্মিত। চলচ্চিত্রটি অস্কারের দুইটি শাখায় মনোনীত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস লাইব্রেরিতে এটি সংরক্ষিত আছে। ২০০৪ সালে ছবিটির একটি রিমেক মুক্তি পায়।
২. Zimna Wojna
মুক্তির সালঃ ২০১৮
পরিচালকঃ পাভেল পাভলিকোভস্কি
শ্রেষ্ঠাংশেঃ জোয়ানা কুলিগ, টোমাস কট
সম্পূর্ণ ভিন্ন সংস্কৃতিতে বেড়ে ওঠা দুইজন মানুষের পরিচয় হয়। গড়ে ওঠে প্রেম। কিন্তু স্নায়ুযুদ্ধের অস্থির সময়ে তাদের মধ্যে দেখা দেয় টানাপোড়েন। ইস্টার্ণ ব্লকের তৎকালীন বাস্তবতার নিরিখে চলচ্চিত্রটি তৈরি হয়েছে।
২০১৮ কান চলচ্চিত্র উৎসবে চলচ্চিত্রটি গৌরবময় পাম দ’র পুরস্কারের লড়াইয়ে মনোনীত হয়েছিলো। পরিচালক পাভলিকোভস্কি পেয়েছিলেন শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কার। উৎসবে ছবিটি যখন প্রদর্শিত হয়, টানা ১৮ মিনিট দর্শকেরা দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে সম্মান জানান।
১. Dr. Strangelove or: How I Learned to Stop Worrying and Love the Bomb
মুক্তির সালঃ ১৯৬৪
পরিচালকঃ স্ট্যানলি কুবরিক
শ্রেষ্ঠাংশেঃ পিটার সেলারস, জর্জ সি স্কট
স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পারমাণবিক যুদ্ধ নিয়ে যে আশংকা তৈরি হয়েছিলো মানুষের মনে, ব্ল্যাক কমেডি ঘরানার এ চলচ্চিত্রটি তারই একটি স্যাটায়ার। আমেরিকানদের বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন অদ্ভুত এক ষড়যন্ত্র করছে, এমন খবর পেয়ে আমেরিকান বিমানবাহিনীর এক জেনারেল সোভিয়েত ইউনিয়নে পারমাণবিক বোমা বর্ষণ করতে নির্দেশ দেন। পুরো পৃথিবী ধ্বংস হবার আশংকায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বিমানের পাইলটদের সাথে আবার যোগাযোগ করে তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন।
স্ট্যানলি কুবরিকের অন্যতম সেরা ছবি হিসেবে ধরা হয় এ চলচ্চিত্রকে। আমেরিকার কংগ্রেস লাইব্রেরিতে এটি সংরক্ষিত আছে। এএফআই এর শতাব্দীর সেরা কমেডি চলচ্চিত্রের তালিকায় এটি আছে তিন নম্বরে।
This article is made possible by the support of the American People through the United States Agency for International Development (USAID.) The contents of this article are the sole responsibility of the Quizards project and do not necessarily reflect the views of USAID or the United States Government.